ক্রমশ একলা হচ্ছেন খলিলুর, কালীঘাটে যাওয়ার আগে প্রস্তুতি বৈঠকে গরহাজির একাধিক নেতা,বিধায়ক

নিজস্ব সংবাদদাতা,জঙ্গিপুরঃ দিন তিনেক পরেই দিদির মুখোমুখি হবেন মুর্শিদাবাদের দুই সাংগঠনিক জেলার নেতারা। তার আগে মঙ্গলবার দলের নানা স্তরের নেতাদের নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক সেরে নিলেন জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি খলিলুর রহমান। এদিন তিনি বলেন, “লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে বুথ ভিত্তিক বৈঠকে কর্মী সম্মেলন করা, নির্বাচনের প্রচার নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা সহ দিদির কাছে যাওয়ার আগে দলের সব স্তরের নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করতে এদিনের বৈঠক ডাকা হয়েছিল।”

সম্প্রতি গোষ্ঠী কোন্দল ফের মাথা চারা দিয়ে উঠেছে জঙ্গিপুরে। চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, সভাপতি খলিলুরের সঙ্গে বনিবনা হয় না সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাসের সঙ্গে। দলের শীর্ষস্তরে আলোচনা না করেই সুতি ২ ব্লকের সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন চেয়ারম্যান। আবার শমসেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম দলের অনুমতি না নিয়েই ব্লক কমিটি, অঞ্চল কমিটি ঘোষণা করছেন। দুই ক্ষেত্রেই জেলা কমিটির পরিচালনা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছিল তৃণমূল স্তরে। এদিনের বৈঠকে গরহাজির ছিলেন জাকির, মণিরুলরা। দুয়ারে লোকসভা নির্বাচন।

তার আগে দলের নেতারা একসুর না হলে তার প্রভাব ভোটে পড়তে পারে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফল পেতে পারে বিরোধীরা। তেমনি বিড়ি মালিক আর এক বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসের দলের কাজকর্মে তেমন সক্রিয়তা না থাকায় তৃণমূলের একটা অংশ ক্ষুব্ধ।  একইসঙ্গে সাংসদ পদে প্রার্থী হিসেবে খলিলুর রহমানের ফের নাম উঠুক তাও চাইছেন না দলেরই একাংশ। সেসব প্রসঙ্গই উঠতে পারে ‘দিদি’র বৈঠকে। স্বাভাবিকভাবেই খানিকটা অস্বস্তি নিয়েই কালীঘাটের ট্রেন ধরবেন জঙ্গিপুরের নেতারা। 

একইভাবে গোষ্ঠী কোন্দলে জেরবার তৃণমূলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ জেলা সংগঠনও। তবে ‘দিদি’র বৈঠকে যাওয়ার আগে তারা কোনও প্রস্তুতি বৈঠক করছেন না বলে জানান সংগঠনের সভাপতি অপূর্ব সরকার। তিনি বলেন, “দুই জেলা মিলিয়ে আনুমানিক ২৫০ জন প্রতিনিধি দিদির বৈঠকে যাবেন। সেখানে দিদি যা নির্দেশ দেবেন সেই নির্দেশ আমরা পরের দিন থেকে মেনে চলব। আপাতত এটুকুই আমি জানি।”

শুধু তাই নয়, জেলায় ইতিমধ্যে সংগঠন শক্তিশালী করতে মাঠে নেমেছে আইএসএফ। যা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে শাসক দল। সোমবার রেজিনগরের সভা থেকে ভাঙড়ের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকী বলেছেন, “মুর্শিদাবাদের তিনটি আসনকে পাখির নজরে দেখছি আমরা।” মুখে আইএসএফকে “ভোট কাটুয়া” তকমা দিলেও জেলার একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে আইএসএফের প্রতি মানুষের যে উৎসাহ বাড়ছে তা নজর এড়ায়নি মুর্শিদাবাদের তৃণমূল নেতাদের।

সেই সব তথ্য ও তত্ব নিয়েই কালীঘাটে যাবেন তৃণমূল নেতারা, দাবি  তৃণমূল সূত্রেই।